১৭ মিনিটের অবরোধ শেষে ৬ দাবি জানালেন শিক্ষার্থীরা

১৭ মিনিট শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখার পর জাতীয় জাদুঘরের সামনে ফিরে গেছেন রাজধানীর ৩০টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। অবরোধ কর্মসূচি থেকে ধর্ষকের প্রকাশ্য শাস্তিসহ মোট ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।


মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
অবরোধ চলাকালে সংবাদ সম্মেলনে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ কলেজের শিক্ষার্থী মো. নকীব সাদাত বলেন, এই সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা ছিল অন্যরকম। আমরা ভেবেছিলাম তাদের হাত ধরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু উল্টো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। একই সঙ্গে ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধের পরিমাণও বেড়েছে। সেজন্য আমরা আজ অবরোধ কর্মসূচি পালন করছি। শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে আমরা ছয়টি দাবি ঠিক করেছি। এগুলো অবিলম্বে মেনে নিতে হবে।
দাবিগুলো হচ্ছে —
১. ধর্ষকের শাস্তি জনসম্মুখে নিশ্চিত করতে হবে। যাতে সমাজে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায়।
২. ধর্ষকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে সম্পূর্ণ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করতে হবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।


৩. যদি কোথাও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা, মেডিক্যাল রিপোর্ট তৈরি করা এবং ভিকটিম ও সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। আর পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে ধর্ষকের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে একটিতেও অসামঞ্জস্য থাকলে, সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। ধর্ষণ মামলার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে ধর্ষিত নারী এবং পুরুষের স্পার্ম পরীক্ষা করার জন্য ল্যাবরেটরির সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
৪. ধর্ষণের বিচার সালিশের মাধ্যমে করা যাবে না। এর বিচার নিশ্চিত করবে শুধুমাত্র রাষ্ট্র। সালিশি বিচার আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি অনৈতিক পন্থায় প্রশাসন কর্তৃক যদি ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত আসামি ছাড়া পায়, তবে তদন্ত অনুযায়ী কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে।
৫. অপ্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ দ্বারা ধর্ষণের শিকার হলে সর্বোচ্চ ফাঁসি এবং অন্তত আমৃত্যু কারাদণ্ড কার্যকর করতে হবে।
৬. বর্তমানে চলমান সব ধর্ষণ মামলার বিচার আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এ বিষয়ে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জবাবদিহি করতে হবে।
অবরোধ কর্মসূচিতে ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ, নটরডেম কলেজ, ঢাকা কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লালবাগ মডেল কলেজ, উইলস্ লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জলসিঁড়ি ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজ, শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সবুজবাগ সরকারি কলেজ, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ ও হামদর্দ কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন।


দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- ঢাকা সিটি
- অবরোধ
- ছাত্র আন্দোলন
- রাজধানীর খবর
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: