• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

Advertise your products here

  1. অপরাধ

গ্রিন ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধি পরিচয়ে প্রতারণা : টার্গেট বাস মালিক


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: রবিবার, ০৮ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৮:৩৮ পিএম
গ্রিন_ইউনিভার্সিটির_প্রতিনিধি_পরিচয়ে_প্রতারণা_টার্গেট_বাস_মালিক
অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম মনির

গ্রিন ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধি পরিচয়ে বাস নিয়ে পরিবহন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বছর চুক্তিতে বাস নিয়ে নিজেই মালিক সেজে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন মনিরুল ইসলাম মনির। তার বিরুদ্ধে গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে একাধিক অভিযোগ করা হলেও কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

কে এই মনিরুল ইসলাম মনির?

খোঁজ নিতে গিয়ে বেড়িয়ে এসেছে থলের বিড়াল! ইতিপূর্বে ছিলেন বাসের ড্রাইভার। বর্তমানে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বাস দেয়ার জন্য বিশেষ ব্যক্তির ভায়া হয়ে কাজ করেন। মনিরুল ইসলাম মনির (৪৫) মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার চরপাকুরিয়া এলাকার আবুল হাসেমের ছেলে। তিনি রাজধানীর দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকায় বসবাস করেন। অভিযোগ রয়েছে, বাস মালিকদের টার্গেট করে দফায় দফায় প্রতারণা করছে এই মনির। পরিবহন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাস নিয়ে প্রতারণা করে ইউনিভার্সিটি থেকে লাখ লাখ টাকা নিজেই মালিক সেজে ভাড়া খাটিয়ে তুলে নিচ্ছেন।

তার বিরুদ্ধে একাধিক থানায় জিডি ও অভিযোগ থাকার পরও আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় পরিবহন সংশিষ্টরা প্রতিনিয়িত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এ ব্যাপারে গত ৩ অক্টোবর গ্রিন ইউনিভার্সিটির কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন পরিবহন ব্যবসায়ী তাশদীদ উল ইসলাম। আরেক পরিবহন ব্যবসায়ী সাইদুর রহমানও একই অভিযোগ করেছেন। মনিরুল ইসলাম মনিরের বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দুই থানায় পৃথক তিনটি জিডি করা হয়েছে। জিডি করেন পরিবহন ব্যবসায়ী শিহাব ইসলামভাটারা থানায় গত ২ অক্টোবর, বাসচালক জুবায়েদ হোসেন জয় ৩ অক্টোবর জিডি করেছেন এবং  তাশদীদ উল ইসলাম ২ অক্টোবর কাফরুল থানায় জিডি করেন। 

আরও পড়ুন>> অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারণা এবং সতর্কতা অবলম্বন

গ্রিন ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মনিরুল ইসলাম মনির গ্রিন ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধি পরিচয়ে পরিবহন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেখা করেন। ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বাস নেয়ার জন্য একটি চুক্তি ফরম দেখানো হয়। একবছর চুক্তিতে পরিবহন ব্যবসায়ীরা ওই ব্যক্তির কথায় বাস দেয়। চাহিদা অনুযায়ী নতুনভাবে বাসে মেরামত ও রঙের কাজ সম্পন্ন করার পর ইউনিভার্সিটির স্টিকার লাগানো হয়। বাসগুলো নিয়মিত গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাতায়াত শুরু করে। কিন্তু ১৫দিন পরই মনিরের আচরণ পাল্টে যায়। বাসের চালক ও হেলপারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করে। মাসের ২৫ দিনের মাথায় পরিবহন ব্যবসায়ীদের সোজাসাপ্টা জানিয়ে দেয়, বাসগুলো আর ইউনিভার্সিটিতে চলবে না!

টাকা চাইলে শুরু হয় তালবাহানা। ইউনিভার্সিটিতে অভিযোগ করা হবে বলতেই শুরু হয় হুমকি-ধামকিসহ মারমুখী আচরণ। বাস নিয়ে ২৫দিন খাটিয়ে টাকা না দিয়ে পরে অন্য পরিবহন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আরেকটি বাস এনে তাদেরকে ৫দিন খাটিয়ে পুরো মাসের টাকা আত্মসাৎ করে মনির। এভাবেই সে একের-পর-এক পরিবহন মালিকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। সংবাদ সংক্রান্তে মন্তব্য নিতে মনিরুল ইসলাম মনিরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

অভিযোগে আরও বলা হয়, বাসের ভাড়া, তেলের টাকা ও ড্রাইভারসহ স্টাফদের বেতনের পুরো টাকা মালিকদের না জানিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এভাবে প্রতিনিয়ত গ্রিন ইউনিভার্সিটির সম্মান ক্ষুন্ন করে চলেছে মনির। 

অন্যান্য খবর>> ইসরায়েলে ৫ হাজার রকেট ছুড়েছে হামাস, 'যুদ্ধ পরিস্থিতি' ঘোষণা

পরিবহন ব্যবসায়ী তাশদীদ উল ইসলাম জানান, তার বাস নিয়ে নিজে মালিক সেজে লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে ওই ব্যক্তি। আরেক ব্যবসায়ী শিহাব ইসলামের বাস নিয়েও ২ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করে। সে বেশকয়েকজন পরিবহন ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ওই ব্যক্তি ইতিপূর্বে বাস নিয়ে অন্য ইউনিভার্সিটিতে খাটিয়েছে। সেই বিশ^াসে তাকে আবারও বাস দেয়া হয়। এবার গ্রিন ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধি পরিচয়ে একবছর চুক্তিতে বাস নিয়েছিলো। মাসের শেষ সময়ে বাসটি আর চলবে না বলে জানায়। পরে অন্য পরিবহন ব্যবসায়ীকে পটিয়ে আরেকটি বাস নেয় এবং ৪-৫দিন চালিয়ে মাসের পুরো টাকা উত্তোলন করে নেয় মনির। 

গ্রিন ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করে তাশদীদ উল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষ বলছে ‘যা-রে বাস দিছেন, তার কাছে যান’। সুষ্ঠু তদন্ত করে মনিরের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের সম্মান রক্ষার্থে অভিযোগের অনুরোধ জানিয়েছেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতারণার শিকার পরিবহন ব্যবসায়ীরা।

একইসঙ্গে যথাযথ নিয়মে ইউনিভার্সিটির মাধ্যমে ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৯৬১১ এবং ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৮০২৪ নম্বরের দুটি বাস নিয়মিত চলাচলের জন্য অনুমতি প্রার্থনা করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কারো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

পুনরুত্থান/সালেম/সাকিব/এসআর

দৈনিক পুনরুত্থান / নিজস্ব প্রতিবেদক

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন