শেরপুরে সড়কে অবৈধ বাজার জনগণের ভোগান্তি, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
রাস্তা সংকুচিত করে নির্মিত দোকান ঘর ভাড়া দিয়েছে পৌরসভা। আবার সেই ভাড়াটিয়া তার সামনের রাস্তা ভাড়া দিয়েছেন অন্য ব্যবসায়ীকে। এর ফলে
বগুড়ার শেরপুর পৌরশহরের গুরুত্বপূর্ণ রেজিস্ট্রি অফিস রোড হয়ে উঠেছে বৃহৎ এক বাজার। ভোগান্তি কমাতে বাজারটি স্থানান্তর করে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করার দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানায়, প্রায় দুই দশক ধরে শেরপুর পৌরশহরের রেজিস্ট্রি অফিস মোড় থেকে বারোদুয়ারী খন্দকার পাড়া পর্যন্ত এই বাজার বসে। রাস্তার দুই ধারে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিনশতটি দোকানের আকার ও স্থান ভেদে জায়গার ভাড়া দৈনিক ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এর সবটাই নেয় তার পিছনের দোকানী বা বাড়ির মালিক। পৌরসভা থেকে কোন খাজনাও আদায় করা হয় না বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এই সময়ে রাস্তাগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা ফজলুর রহমান বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে পৌরসভার ড্রেনের উপর ৪৪টি দোকান ঘর তৈরি করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় লোকজন সেগুলো মাসিক ৩০০ টাকায় ভাড়া নিয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই আবার অন্য জনের কাছে মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছেন। তারা তাদের সামনের রাস্তা সবজি ও মাছ বিক্রেতাদেরকে দৈনিক ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় ভাড়া দিয়েছেন। এর ফলে রাস্তায় চলাচল করা অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে।
মাছ ব্যবসায়ি আব্দুল বাছেদ বলেন, ৭০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে ২৫ বর্গফুটের একটি ঘর ভাড়া নিয়েছি। প্রতিদিন ৪০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। কিন্তু জায়গার সংকুলান না হওয়ায় রাস্তার পাশে মাছ বিক্রি করছি। এর জন্য প্রতিদিন মানুষের গালিগালাজ শুনতে হয় আমাদের।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক হিমাংশু সরকার বলেন, এই বাজারের মাত্র ১০০ গজ দূরেই শেরপুর বারোদুয়ারী হাট। সেখানে সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে। বাকি দিনগুলো ফাঁকা পড়ে থাকে। বাজারটি সেখানে স্থানান্তর করেল পৌরসভা রাজস্ব পেতো এবং জনগণের ভোগান্তিও কমত।
মাংস ব্যবসায়ি বাবলু শেখ বলেন, রাস্তায় বাজার বসার কারণে ক্রেতারাও ভোগান্তির শিকার হন। তাই সরকার যদি বাজারটি অন্য কোথাও সরিয়ে নেয় তাহলে সবাই উপকৃত হবে।
অবৈধ কাঁচা বাজারের কারণে জনগণের ভোগান্তির কথা স্বীকার করেছেন পৌর প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও শেরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আশিক খান। তিনি বলেন, বাজারটি ২০০৫ সাল থেকে শুরু হলেও সরকার সেখান থেকে কোন রাজস্ব পায় না। উপরন্তু এটি জনদূর্ভোগের কারণ হয়েছে। ব্যাবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে সেটি সুবিধাজনক জায়গায় স্থানান্তর করা হবে।
দৈনিক পুনরুত্থান / নিজস্ব প্রতিবেদক
আপনার মতামত লিখুন: