শেরপুরে আলু চাষে ব্যয় বৃদ্ধি তবুও আলুতেই লাভের আশা কৃষকের
দিগন্ত মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। তবে এই সবুজের সমারোহ ধান ক্ষেতের কচিপাতার নয়, এটি আলু ক্ষেতে বেড়ে উঠা তরতরে আলু গাছের পাতা। এমন দৃশ্য শোভা পাচ্ছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন আলু জমির দিকে তাকালে। কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে ফসলের মাঠ।
ভালো দাম হওয়ায় এই উপজেলায় ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, গ্যানোলা, এস্টারিক্স, এ্যালুয়েট, সুর্যমুখী, শানশাইন, ক্যারেজ, হাগড়াই, এডিশন, মাডডাই ও পাগড়িসহ বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হয়েছে। আলুক্ষেত ছত্রাক ও রোগ-বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষায় বালাইনাশক-ইস্প্রে করছেন কৃষকরা। এছাড়া কেউ জমিতে থাকা আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগ ও সেচ দিচ্ছেন। এ বছর উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেলেও আলুতেই লাভের আশা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন গ্রামের মাঠে এখন আলু গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বাজারে আলুর ভালো দাম থাকায় আলু চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। মাঠে মাঠে এখন আলু রোপন ও ক্ষেত পরিচর্যা চলছে। ক্ষেতগুলোতে গাছ বেড়ে উঠে সবুজ বর্ণ ধারন করছে। তরতাজা সবুজ গাছগুলো স্বপ্ন দেখাচ্ছে কৃষকদের। তবে বিগত বছরের চেয়ে এবার বীজ আলুর দাম বেড়েছে। এরসাথে সার, সেচ, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচও বেড়েছে। নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি বস্তা বীজ আলু ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা বেশি নিয়ে বিক্রি করেছেন এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। সরকারি, বেসরকারি এবং কৃষক পর্যায়ে তিন ক্ষেত্রেই বেড়েছে আলু বীজের দাম। সেই সঙ্গে সার কীটনাশকসহ শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধিতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এতে করে লাভ কম হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে।
শস্যভান্ডার খ্যাত শেরপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে আলু চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমি, আর সেক্ষেত্রে চাষ হয়েছে ২ হাজার ৭৬৫ হেক্টর জমি। তবে বিগত বছরেও লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমি ছিল বলে কৃষি অফিস জানিয়েছেন।
উপজেলার কেল্লা গ্রামের সোহাগ টুনিপাড়া এলাকার আলু চাষি নজরুল ইসলাম জানান, ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে আলু গাছে বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। এজন্য আগে থেকে ক্ষেতে ছত্রাকনাশক ওধুষ স্প্রে করা হচ্ছে। যাতে আলু গাছে পচন রোগ না ধরে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার জানান, এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। ছত্রাক ও রোগ-বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষায় কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। অনুকুল আবহাওয়া, রোগবালাই না হলে বাম্পার ফলন হবে বলে আশাবাদী।
দৈনিক পুনরুত্থান /
আপনার মতামত লিখুন: