বরগুনার তালতলীতে খাদ্য বান্ধব কর্মসুচীর ডিলার নিয়োগে অনিয়ম
655e2d7eb18ab.webp.webp)
তালতলী উপজেলা খাদ্য বান্ধব কর্মসুচীর ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাগ বাটোয়ার করতে গিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সামলা হাতাহাতির ঘটনার সমাধান করেছেন। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে নিন্দার ঝড় ওঠেছে। দ্রুত অনিয়মের মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ দেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।


জানাগেছে, তালতলী উপজেলা খাদ্য বান্ধব কর্মসুচীর ডিলার নিয়োগ দিতে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস গত ফেব্রæয়ারী মাসে নোটিশ দেয়। গত ৫ মার্চ পর্যন্ত ছিল আবেদনের শেষ দিন। ডিলার নিয়োগ পেতে উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে ৭৮ জন আবেদন করেন। এর মধ্যে ৪৩ টি আবেদন বিভিন্ন কারন দেখিয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস বাতিল করেছেন। গতকাল বুধবার ডিলার নিয়োগের দিন ধায্য করেন নিয়োগ বোর্ড।
ওইদিন ৭৮ জন আবেদনকারীসহ বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী তালতলী উপজেলা খাদ্য অফিসের কার্যালয়ে জড়ো হয়। ওই সময় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ শহীদুল হক ও বহিস্কৃত উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মিয়া মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতেই ডিলার নিয়োগের অনিয়ম নিয়ে বিএনপির কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও বহিস্কৃত সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাকের দেয়া তালিকা অনুসারে ৬ ইউনিয়নে ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়।
ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরেছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিন্দার ঝড় ওঠেছে। ডিলার নিয়োগে আবেদনকারী মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, বথিপাড়া কেন্দ্রের তিনজনে আবেদন করেছিলাম কিন্তু আমার ও মোশারফ নামের দুইটি আবেদন খাদ্য অফিসার কোন তদন্ত ছাড়াই বাতিল করে দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ডিলার নিয়োগের অনিয়মের অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেছি। কিন্তু তিনি তা আমলে নেয়নি।
খোজ নিয়ে জানাগেছে, ছোটবগী ইউনিয়ন ও বড়বগী ইউনিয়ন ভাগ বাটোয়ারার মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের পুরাতন বাজার কেন্দ্রে যাচাই বাছাইতে মিলন, সোনাকাটা ইউনিয়নে লাউপাড়া কেন্দ্রে মোঃ হুমায়ুন কবির, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের মেনিপাড়া কেন্দ্রে নাশির উদ্দিন ও শারিকখালী ইউনিয়নের কচুপাত্রা বাজারের কেন্দ্রে মোঃ কাওসার আলম ও আঙ্গারপাড়া কেন্দ্রে মাসুম খানের একক আবেদন রাখা হয়েছে। ওই কেন্দ্র গুলোতে উপজেলা খাদ্য অফিসার তহিদুর রহমান যাচাই বাছাইয়ের নামে অন্য সকল আবেদন বাতিল করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন জসিম উদ্দিন, ইউসুফ খান, হাসান ও তরিকুল ইসলামসহ অনেকে।
তালতলী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ শহীদুল হকের মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তালতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তহিদুর রহমান তার অফিসের সামনে ডিলার নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, কোন অনিয়ম হয়নি। যাচাই বাছাই শেষে সঠিক প্রক্রিয়ায় ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যাদের আবেদন বাতিল হয়েছে তারা অভিযোগ দিয়ে তাও উড্ডো করে নিয়েছেন।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা বলেন, খাদ্য অফিসের সামনে গন্ডগোলোর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। অনিয়মের অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সফিউল আলম বলেন, অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


দৈনিক পুনরুত্থান /
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আপনার মতামত লিখুন: