গুম খুনের আসামী হাসিনার বিচার দ্রুততম সময়ে করতে হবে : মামুনুল হক
বাংলাদেশ খেলাফত মসলিসের মহাসচিব কারা নির্যাতিত নেতা শায়খুল হাদিস হাদিস আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা তার লুটপাটের মধ্য দিয়ে বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এক মহাসংকটে পতিত করে গেছেন।
এর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হলে সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। দেশের আপামর জনসাধারনের আশা-আকাংখাকে বৃদ্ধাজ্ঞলি প্রদর্শন করে প্রতিবেশী রাষ্ট ভারতের পরামর্শ ও নির্দেশনায় সংবিধান সংশোধন করে ইসলামকে সংকোচিত করে শিক্ষানীতি গ্রহণ করেছিল। বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর যে স্বপ্ন শেখ হাসিনা দেখেছিল তার ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। ৫ আগস্টের গণঅভূত্থানকে ব্যর্থ করে দিতে শেখ হাসিনা ভারত বসে বসে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে ষড়যন্ত্রকারীদের সর্ম্পকে।
আওয়ামী লীগের নাম নিয়ে রাজনীতি না করার আহবান জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, শেখ হাসিনার ৫০ বছরের রাজনীতি লুটপাটের রাজনীতি, ৫০ বছরের রাজনীতি খুন-গুমের রাজনীতি, ৫০ বছরের রাজনীতি দেশের মানুষের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার রাজনীতি। সে এদেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য আসেনি এসেছিল প্রতিশোধ নিতে। ২০০৬ সাল থেকে ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট পযর্ন্ত প্রতিটি খুন-গুমের বিচার করা হবে। বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহবান জানান।
মামুনুল হক বলেন, ১৯৭১ সালে বহু মানুষের রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের একবছর যেতে না যেতে সেই মুক্তিযুদ্ধের সফলতা ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ছিনতাই করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের কমিটমেন্ট ছিল নির্বাচনে বিজয়ী হলে এদেশে কেউ কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন হবেনা। কিন্তু বিজয়ের কয়েকদিন পরেই পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের লিখে দেয়া প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে যে সংবিধান জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতার বিপ্লবের সেই কমিটমেন্টকে ছিনতাই করা হয়েছিল।
৭২ এর সংবিধান নিয়ে তিনি বলেন, ৭২ এর সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। এই সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সংবিধান, বৈষম্য বিরোধী সংবিধান। ভারতের ইন্ধনে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি ধ্বংস করে দেশ মুদিজীর হাতে তুলে দেওয়ার পায়তারা চলছিল। লুটপাট ও পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করা হয়েছে। ভারত তাদের আপনজন শেখ হাসিনাকে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আর্ন্তজাতিক ও দেশীয় আইন মেনেই দেশে এনে তার গুম,খুন ও অর্থপাচারের বিচার করা হবে এমনটি দেশবাসীর প্রত্যাশা।
তিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত শহীদি মার্চের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে মামুনুল হক বলেন, ছাত্র-জনতা সজাগ এবং সোচ্চার থাকতে হবে। ইসলাম প্রিয় ছাত্র জনতা হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী, এদেশের আলেম সমাজ, ইমাম সাহেব, এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমান, আমাদেরকেও এই আধিপত্যবাদ বিরোধী, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে ৫ আগস্টের বিজয়কে সংরক্ষণ করতে হবে। কারণ অর্জিত স্বাধীনতা নৎসাৎ করতে স্বৈচারী শেখ হাসিনা ও তার দোষররা নানা ভাবেই সক্রিয় রয়েছে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মৌলভীবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে গতকাল ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজার পৌর টাউন ঈদগাহ প্রাঙ্গনে এই গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথাগুলো বলেন।
সমাবেশে আলোচনা শেষে আ: লীগের অঙ্গ সংগঠন, ছাত্র লীগ-সহ পুলিশের গুলিতে নিহত সকল শহীদ ছাত্র-জনতার বিল্পবে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের আশু রোগ মুক্তি কামনার জন্য দোয়া করা হয়।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি মুফতী মাওলানা হাবিবুর রহমান এর সভাপতিত্বে ও জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুফতী হিফজুর রহমান হেলাল ও জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসলাম উদ্দীন এর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত গণ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কেদ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা রেজায়ুল করীম জালালী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দীন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, আব্দুল আজিজ, কেন্দ্রীয় সহ-বায়তুল মাল জহিরুল ইসলাম, যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সংগঠন সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল হাই, জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা লুৎফর রহমান কামালী, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা রহমত আলী সহ প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলার বিভিন্ন উপজেলার নেতৃবৃন্দরা ও ভক্তবৃন্দরা প্রমুখ।
দৈনিক পুনরুত্থান / নিজস্ব প্রতিবেদক
- বিষয়:
- গুম
- খুন
- আসামী
- মামুনুল হক
আপনার মতামত লিখুন: