কেশবপুরে ধর্ষণ মামলায় জেল হাজতে পরকীয়ায় আসক্ত স্কুল শিক্ষক
বিবাহিত হয়েও অন্য নারীর সঙ্গে পরকীয়া করার অপরাধে খুলনায় ধর্ষণ মামলায় যশরের কেশবপুর উপজেলার মোঃ লিটন হোসাইন নামের এক স্কুল শিক্ষককে আটক করেছে র্যাব- ৬।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তাকে আটক করা হয়। খুলনা সদর থানা সূত্রে জানাযায়, আটক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় এক নারী অভিযোগ করায় তাকে আটক করা হয়েছে। আটক মোঃ লিটন হোসাইন ১১নং হাসানপুর ইউনিয়নের নেহালপুর গ্রামের মৃত মোজহার আলী'র ছেলে।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল গিয়াস বলেন, আসামী স্কুল শিক্ষক লিটনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।
এদিকে, সহকারী শিক্ষক আটক মোঃ লিটন হোসাইনের বিরুদ্ধে তার বিবাহিত স্ত্রী লাভলী খাতুন "পরকীয়া আসক্ত দুঃশ্চরিত্র স্কুল শিক্ষক স্বামী কর্তৃক নারী নির্যাতন, যৌতুক দাবি, বিনা অনুমতিতে ২য় বিবাহের চেষ্টা ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগ" এনে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কেশবপুর নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, ২০১৮ সালে বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ লিটন হোসাইনের সাথে ইসলামী বিধান অনুযায়ী সাতক্ষীরার তালা উপজেলার কানাইদিয়ার আহাল আলী বিশ্বাসের মেয়ে লাভলী খাতুনের সাথে বিবাহ হয়। বর্তমানে তাদের তাসনুভা আক্তার নামে ৩বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
বিবাহের সময় আনুমানিক ২ লক্ষাধিক টাকার সাংসারিক জিনিসপত্র এবং স্বর্ণালঙ্কার প্রদান করেন এবং চাকুরিতে যোগদানের সময় তার স্ত্রী পিত্রালয় থেকে নগদ টাকা ছয় লক্ষ টাকা এনে দেন। কিন্তু শিক্ষক মোঃ লিটন একজন পর সম্পদ লোভী ও পরনারী আসক্ত প্রকৃতির ব্যক্তি। শিক্ষক মোঃ লিটন গত ২-৩ মাস যাবত আমার নিকট আবারও চার লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছে। টাকা দিতে না পারায় আমার উপর কথায় কথায় শারীরিক ও মানসিক ভাবে অমানুষিক নির্যাতন শুরু করিতে থাকে এবং নানা প্রকার হুমকি ধামকি দিতে থাকে, যাহার পরিপ্রেক্ষিতে সংসারে মনোমালিণ্য সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানাযায়, শিক্ষক মোঃ লিটন হোসাইন পরনারী আসক্ত হওয়ায় গোপনে আসমা খাতুন নামীয় অজ্ঞাত এক মহিলার সহিত পরকীয়ায় আসক্ত। কিছুদিন আগে তারা একবার বিবাহের চেষ্টা করে কিন্তু সফল হয় নাই। অচিরেই তারা বিবাহ করবে বলে আমি জানতে পেরেছি। এমতাবস্থায় আমি কণ্যা সন্তানটি লইয়া পিত্রালয়ে অবস্থান করিতেছি। বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ও স্ত্রী'র অভিযোগের বিষয়ে স্কুল শিক্ষক মোঃ লিটন হোসাইনের ছোট ভাইয়ের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পলাশ কুমার দাস বলেন, আমার স্কুল ছুটির পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর সহকারী শিক্ষক লিটন হোসাইনকে র্যাব-৬ আটক করে নিয়ে যায়। পরে জানতে পারি তার বিরুদ্ধে ধর্ষণে মামলা হয়েছে। মামলার কাগজ পত্র আমাকে দেখানোর জন্য পরিবারকে বলেছি। আটকের বিষয়টি কেশবপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ আব্দুর রব স্যারকে জানিয়েছি। তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। কেশবপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ আব্দুর রব বলেন, সহকারী শিক্ষক লিটন হোসাইনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছি। প্রতিবেদন পেলেই আমি যশোর জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠাবো। তিনিই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন। যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের প্রতিবেদন পেলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৈনিক পুনরুত্থান / নিজস্ব প্রতিবেদক
- বিষয়:
- কেশবপুর
- ধর্ষণ
- মামলা
- স্কুল শিক্ষক
আপনার মতামত লিখুন: