• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

Advertise your products here

  1. সারাদেশ

কলাপাড়ায় সংখ্যালঘুর গরু চুরি করলো বিএনপি কর্মীরা কল রেকর্ড ফাঁস!


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:৩০ পিএম
কলাপাড়ায় সংখ্যালঘুর গরু চুরি করলো বিএনপি কর্মীরা কল রেকর্ড ফাঁস!
কলাপাড়ায় সংখ্যালঘুর গরু চুরি করলো বিএনপি কর্মীরা কল রেকর্ড ফাঁস!

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নে কতিপয় বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে গরু চুরিসহ নানা রকম সমাজ বিরোধী অভিযোগ উঠেছে। এলাকা সূত্রে জানা যায় নীলগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির কিছু সমর্থক সনাতন ধর্মের এক ব্যক্তির দুটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়।চুরির সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কথোপকথনের এমন একটি কল-রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার প্রধান দেশত্যাগ করলে এলাকায় লুটপাট,চুরি, ডাকাতি,মারামারি শুরু করে দৃর্বত্তরা।আর এদের কার্যক্রমের আড়াল থেকে উৎসাহ দিচ্ছেন ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম (জহির) ও ইউনিয়ন বিএনপি'র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক মৃধা এমন অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। মূলত এই দুই জনের ছত্রছায়ায় থেকেই দূর্বৃত্তায়নকারী(১) খলিল হাওলাদার (২) সাইফুল মোল্লা (৩)আলামিন ফকির(৪) সোহেল হাওলাদর(৫) মাসুম হাওলাদার(৬)রুবেল হাওলাদার (৭)সাত্তার ফরাজি নামক চক্রটি তাদের কর্মকাণ্ড করছে।স্থানীয়রা বলছে এদের বর্বরোচিত অত্যাচারে সাধারন মানুষ মুখ খুলে কথা বলার সাহস পায় না।

তারা এলাকায় নিজেদের আধিপত্য তৈরি করতে এমন ভাবে ক্ষমতা প্রয়োগের চেষ্টা করছে প্রতিবাদ করলেই পড়তে হয় বিপদে।দলীয় লোকজন কর্তৃক এমন ঘটনার সত্যতা জানার জন্য ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন শেখ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,সত্য কথা বলতে গেলে আমাদের দলের সমালোচনা করা হবে।আমাদের ওয়ার্ড জুড়ে যতো অপরাধ অপকর্ম হচ্ছে তা এদের মাধ্যমেই সংগঠিত হচ্ছে।দলের কিছু নেতাদের ছত্রছায়ায় প্রভাব বিস্তার করা চক্রটি মানুষের মোটরসাইকেল,অটো গাড়ির ব্যাটারি,দোকান ঘর,বাড়ি-ঘর চুরি,দখল,চাঁদাবাজি, ভূমি-দস্যুতাসহ সবকিছু এরাই করছে।মূলত এরা সুবিধাবাদী রাজনৈতিক কর্মী সুযোগ বুঝে ভোল-পাল্টায়।

আমরা আমাদের নীতিনির্ধারকদের বিষয়গুলো অবগত করেছি।তাদের যদি নিয়ন্ত্রণ করা না হয় তা হলে দলের চরম বিপর্যয় ঘটবে।ভোটের মাঠে মানুষের কাছে দলের আস্থা হারানোর শঙ্কা রয়েছে। এদের বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন সাবেক ইউপি সদস্য।চুরির ঘটনায় জড়িত চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য মাসুম হাওলাদার ও সোহেল এর মধ্যে কথাবার্তার একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

চোর চক্রের কলরেকর্ড সংরক্ষণ করা(নাম গোপন রাখার শর্তে )এক তথ্য দাতা বলেন,গরু চুরি হওয়া ভুক্তভোগীর নাম কালা ডাকুয়া সে হিন্দু ধর্মের লোক দূর্বৃত্তরা তার গরু চুরি করে জবাই করে খেয়ে ফেলেছে এবং এলাকায় তারা আরো অনেক চুরির সাথে জড়িত।এরা নীলগঞ্জ ইউনিয়ন ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুবদল, শ্রমিক দলের রাজনীতির সাথে জড়িত।অভিযুক্তদের মধ্যে সাইফুল মোল্লার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমি ঘটনার দুই দিন পর এলাকায় এসেছি।আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে আমি তার সাজা স্বেচ্ছায় বরণ করবো।

ভূক্তভোগী কালা ডাকুয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমার গরু চুরি হয়েছে এটা সত্য।এখন তাদের ভয়ে এলাকায় থাকাটা ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে,আমরা কি এলাকায় থাকতে পারবো না,তারা বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখায়।এরা দলে অনেক বড় এদের সাথে আগের চেয়ারম্যান মেম্বার পেরে উঠেনি।এরা এতোটাই প্রভাব প্রয়োগ করতো যে স্থানীয় শালিশ বিচারে তারা নিজেদের কর্তৃত্ব দেখাতো।তাদের সুবিধা মতো চুক্তি না করলে অন্যের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে রায় তাদের পক্ষে দিতো। আমার জমিজমা নিয়ে এমন একটি শালিশে তাদেরকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।তারপর এই গরু চুরি করে নিয়েছে।আমরা স্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন করতে চাই আপনারা আমাদেরকে একটু সাহায্য করেন।চাঁদপাড়া থেকে এক ভূক্তভোগী নারী বলেন,আমাকে তারা অনেক নির্যাতন করেছে।এদের অত্যাচার নির্যাতনে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।কিছুদিন আগে তাদের এমন নির্যাতনের শিকার হয়ে একটি মামলা করেছিলাম।

এখন তারা আমাকে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করছে সাথে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করছে। যদি মামলা তুলে না নেই ও দাবি করা টাকা না দেই তাহলে আমার আরো বড় ক্ষতি করবে বলে আশঙ্কা করছি।কলাপাড়া থানার একটি অভিযোগ পত্রে দেখা যায় ৫-৯-২২ ইং তারিখ অটল হাওলাদার নামে একজন কৃষক তার গরু চুরি নিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।সেখানে সোহেল হাওলাদার ও মাসুম হাওলাদারকে আসামি করা হয়।মামলার পর থেকে আসামি দুই জন আত্মগোপনে চলে যায় বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। বহুদিন আত্মগোপনে থাকা সোহেলকে মহিপুর থানা পুলিশ গত ১২-২-২৩ ইং তারিখ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করে যাহার মামলা নং ৪/২৩ ইং।

মাদক মামলায় জামিনে আসার পর গত ১৬-৪-২৩ তারিখ গরু চুরির মামলায় সোহেলকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।অপর দিকে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা আসামী মাসুম হাওলাদারকে গত ২৪-৪-২৩ ইং তারিখ মিঠাগজ্ঞ ইউনিয়ন থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে অভিযুক্ত খলিল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমি শুনেছি চাঁন পাড়া এলাকার কালা ডাকুয়ার দুটি গরু চুরি বা হারানো গিয়েছে। তবে এর মধ্যে একটি গরু পেয়েছে আর অন্য গরুটি না কি অসুস্থ ছিলো সেটা পেয়েছে কি না আমার জানা নেই।আর চুরির ঘটনার যে কলরেকর্ড এর কথা বলছেন তা সম্পূর্ণ সাজানো।আমাদের বিএনপির মধ্যে দুটি গ্রুপ আছে এরা একে অপর পক্ষকে হেয় করার জন্য নানা রকম ঘটনা সাজায়।

অটল হাওলাদার ও কালা ডাকুয়ার গরু চুরির ঘটনায় যে মাসুম হাওলাদার এর নাম রয়েছে তাদের নাম এক হতে পারে তবে পিতার নাম ভিন্ন। অভিযুক্তরা কয়েকজন প্রতিবেদক এর কাছে তাদের কর্মকাণ্ডের বিষয় আড়াল করলেও এলাকার লোকজন এদেরকে পেশাদার চোর হিসেবে চেনে বলে জানা যায়।দলের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখতে কর্মী নামক এসব চোর চক্রের সক্রিয় লোকজনের সদস্য পদ বাতিলসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানান ইউনিয়ন বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা।

দৈনিক পুনরুত্থান / নিজস্ব প্রতিবেদক

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন