• ঢাকা
  • শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

Advertise your products here

  1. জাতীয়

গণ অভ্যুত্থানে একনায়কতন্ত্রের অবসান, তরুণ প্রজন্মরে হাতে নতুন বাংলাদেশের স্বচ্ছ রাজনীতি


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: বুধবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৫:০৭ পিএম
গণ অভ্যুত্থানে একনায়কতন্ত্রের অবসান, তরুণ প্রজন্মরে হাতে নতুন বাংলাদেশের স্বচ্ছ রাজনীতি

সাধারণ মানুষকে ভালোবেসে নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে কেবল মানুষের জন্য রাজনীতি করতে চাওয়ার সংখ্যা এ দেশে অনেক। তারা দেশের সম্পদ আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুকরণ।

অর্থের লোভ, জনগনের প্রতি অত্যাচার, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ক্ষমতার দাপটের পরিবর্তে সততা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আর সেবার মানসিকতাই তাদের একেমাত্র লক্ষ্য। তারা ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে রাখেন মানব সেবাকে। তবে সেই লক্ষ্যে একনিষ্ট থাকতে গিয়ে পদে পদে প্রতিবন্ধকতা ও বঞ্চনার শিকারও হতে হয়। মাটি ও মানুষের ভালোবাসার কান্ডারি হয়ে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এমন ব্যাক্তিরা সমাজে এখনো বিদ্যমান। মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করাই তাদের জীবনের উদ্দেশ্য। এমনি একজন মানব সেবার কান্ডারি ব্রাহ্মনবাড়িয়া-৬ বাঞ্ছারামপুর বাসির আশা আকাঙ্ক্ষার বাতি ঘর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) প্রফেসর ডাঃ এ কে মাহবুবুল হক, এমবিবিএস, পিজিটি, সিসিডি, এমপিএইচ, এমফিল।

জনগণের স্বান্নিধ্যে থাকতে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত তিনি। অর্জন করেছেন মানুষের অফুরন্ত প্রজ্ঞা ও ভালোবাসা। প্রকৃত অর্থে রাজনীতির প্রতি তার তেমন কোন আগ্রহ না থাকলেও মানুষের নিঃশ্বার্থ সমর্থন তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। তার কার্যক্রমের প্রতি সাধারণ মানুষের অবিশ্বাস্য আস্থা তৈরি হয়েছে।দীর্ঘদিনের একক রাজনৈতিক বেড়াজালে আবদ্ধ রাখা অপশাসকদের দুর্বৃত্তায়ন, বেসামাল দূর্নীতিবাজদের প্রতি সাধারণ মানুষের চরম ক্ষোভ। শাসক দলের প্রতিনিধিদের প্রতি সৃষ্টি হয় ঘৃণা বাড়ে তিক্ততা। অপরপক্ষে সাধারণ মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মতিায় দিন দিন তার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। একজন সৎ সু-শিক্ষিত লোকের জনপ্রিয়তা রোধ করতে শুরু হয় একনায়কতন্ত্রের অপ্রতিরোধ্য চক্রান্ত। 

কেন মেধাবী তরুণ প্রজন্ম রাজনীতিতে আসতে নিরৎসাহী, আর স্বল্প শিক্ষিত দূর্ণীতিগ্রস্হ ব্যাক্তিরা রাজনীতিতে সেই নিদারুণ এক বাস্তব পরিস্থিতি অনুধাবন করেছেন এই উদার মনের ব্যক্তি। তার দীর্ঘদিন ধরে অর্জিত মানুষের ব্যাপক ভালোবাসাকে নোংরা রাজনীতির থাবায় লন্ডবন্ড করে দেওয়ার চক্রান্ত নিয়ে তিনি দিয়েছেন এক বর্ণনা।

তিনি বলেন, আমি কোন রাজনৈতিকভাবে কোন দল করি না। তাই কোন দলের নিকট আমি দায়বদ্ধ নই। আমি কোন দল বা ব্যাক্তির নিকট থেকে কোন সহায়তা তো দুরের কথা এক কাপ চা ও খাওয়ার ইতিহাস নেই। স্বল্প সময়ের জঘন্য রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা আমার জন্য একটি কালো অধ্যায়। স্বৈরশাসক হাসিনার শাসনামলে রাজনীতির চর্চায় মনোনিবেশ করতে গিয়ে এক ভয়ংকর অপরাজনীতির বেড়াজালে অসংখ্য বার প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছি। আমার সাথে যারা মাঠে ছিলো তাদের একাংশের মধ্যে অনেকেই আওয়ামীলীগ দ্বারা নির্যাতিত বা দূর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্হান করায় বহিস্কৃত ও নিস্ক্রিয়। আর বেশীর ভাগ সহকর্মী ছিলো সাধারন জনগন ও সমাজকর্মী। যদিও তাদের মতাদর্শের রাজনীতির প্রতি আমার পূর্বে কোন সম্পৃক্ততা ও অভিজ্ঞতা ছিলনা তারপরও জনগণের সেবা করার প্রবল ইচ্ছা ছিলো মনে। তাই ভেবেছিলাম জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবো।

ব্রাহ্মনবাড়িয়া-৬, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আমার জন্ম ভিটা বাড়ি। ২০২৪ এর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দূর্নীতিবাজ /চোর ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত বহু সংখ্যক সাংসদকে বাদ দিবেন মর্মে বিভিন্ন মহল ও জাতীয় পত্রিকায় সব মুখরোচক সংবাদ আসতে শুরু করলো। এলাকার ক্লিন ইমেজের জনপ্রিয় ব্যক্তিদেরকে আহ্বান জানানো হবে এমনটা শুনা যাচ্ছিলো। আমি আল্লাহর অশেষ রহমতে এলাকায় ক্লিন ইমেজের জনপ্রিয় ব্যাক্তি হিসেবে পরিচিত। সকলের দাবি স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীন ভাবে কথা বলতে চাই। জনগনের মাঝে একটা কথা সব সময় বলাবলি হতো যে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্ত বাঞ্ছারামপুর স্বাধীন হয়নি। একপর্যায়ে আমার রাজনৈতিক কথা শুনে সরকার দলীয় দূর্নীতিবাজরা আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ক্লিন ইমেজের অসংখ্য নেতাকর্মীদের ভালোবাসা ও সমর্থন আমাকে চরম উদ্ভূদ্ব করে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে জনগণের আকাঙ্ক্ষা রাখতে গিয়ে আমি রাজনীতিতে আসি।এলাকার জনগণ সকল বাস্তবতা বুঝেও সব দলের লোকজন তখন শতভাগ সমর্থন দিয়েছিল। বিভিন্ন সংস্থার জরিপে আমার জনপ্রিয়তা ছিল ৮০% এর উপরে।। হাস্যকর যে, হাসিনা বলেছিলো একাধিক ফুল ফুটোক, তবে সবচেয়ে সুন্দর ফুলটি বেছে নেওয়া হবে। কিন্তু তা আর হলো না। বেছে বেছে জঘন্য দূর্নীতিতে পিএইচডি করা সব জালিমদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হলো। মিথ্যা আশায় মরিচিকার পিছনে ছুটে শত শত নিঃস্বার্থবান মানুষ সেই অপরাজনীতির কবলে পড়ে কলঙ্কিত হলো। 

আমি জীবনের কোন সময়েই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলাম না এটা চিরন্তন সত্য। উপজেলা, জেলা বা কেন্দ্রীয় কোন পর্যায়েই আমার কোন পদ নেই। পদে বহাল কোন নেতা কর্মী কোনদিন আমাকে সামান্য কোন অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রন করেনি। অপরদিকে বিভিন্নভাবে সামাজিক মিডিয়ায় আমাকে নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট পোষ্ট দিয়ে নাজেহাল করতে চেয়েছে। মেঘনা ফেরিঘাটে ৮/১০ বার আমাকে প্রতিবন্ধকতায় ফেলে অপমান করেছে। আমি শুধুই জনগণের প্রত্যাশা পূরণের কথা ভাবছিলাম। এলাকায় আমার এতো জনপ্রিয়তা থাকার পরও অপমানের সাথে তা প্রত্যাখ্যান করা হলো।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেনীতে ভর্তি হই ১৯৭৯ সালে। ডান পন্থি রাজনীতির সাথে সক্রিয় ভাবে সম্পৃক্ত হই। এই ধারা তখন থেকে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ জীবনের ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিলো। ১৯৮৮ সালে নিজ এলাকায় ছাত্র যুবকদের নিয়ে শাহ রাহাত আলি ছাত্র যুব ঐক্য সংঘ নামক সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করি। প্রায় সকল ছাত্র দলের কর্মী নিয়ে গড়ে তোলা এই সংগঠনটি আজও চলমান রয়েছে। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পদবীতে আর্মি মেডিকেল কোরে যোগদান করি। অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে ২০২০ সালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে অবসরে গ্রহণ করি।

সামরিক বাহিনীর কঠিন চাকুরী জীবন শেষে অবসর গ্রহণের পর আরাম আয়েশে না থেকে নোংরা রাজনৈতিক ধারায় সময় নষ্ট করার কোন প্রয়োজন ছিল না। এলাকার মানুষের ভোটাধিকার হরন,বাকস্বাধীনতা হরন, ঘুষ, চাঁদাবাজি, দূর্নীতি এতই বেড়ে গেলো যে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে একজন ভাল মানুষের নেতৃত্ব দেখতে চেয়েছিলো।আর এজন্যই সকলে আমাকে মাঠে নামিয়েছিল। টাকার বিনিময়ে সকল আসনে চোরদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। সততা আর যোগ্যতার জীবনাবসান হলো।
আমার সাথে যারা কর্মী ছিলো এরা আওয়ামী লীগের দূর্নীতির বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলো। রানিং এমপির বিরুদ্ধে মাঠে নামা খুবই দুঃসাধ্য কাজ ছিলো।অনেক কর্মী ন্যায়ের পথে অবস্থান নিয়ে অনেক নির্যাতিত হয়েছে।

আমি অসংখ্যবার অপমানিত হলাম, নীতি নৈতিকতা নিয়ে কি লাভ হলো? দূর্নীতিবাজ, চোর, চাঁদাবাজদের কাছে একরকম অপমানিত হতে হলো। তারপরও কি পুনরায় ঐ রাজনৈতিক মেরুতে আর যাওয়া সম্ভম? মনে হয় কোনদিনই না।
তারপর ২০২৪ এর জুলাই -আগষ্টের আন্দোলনে হাজার তাজা প্রান কেড়ে নেওয়ার মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে তা রাজনীতিতে অন্যরকম মেরুকরণ তৈরি করবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সারা দেশে মোট ১৫৮১ জন শহীদ হয়েছিল যা অত্যন্ত বেদনাদয়ক। ৫ ই আগষ্টের ছাত্র-বিপ্লবে হাসিনা তার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে পদত্যাগ করতে এবং দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের ক্ষোভ এতটাই তীব্র ছিল যে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার অগ্রদূত শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষ্কর্যগুলো পর্যন্ত ভাঙচুর করেন। উদিত হয় আবারও এক সম্ভাবনাময় স্বচ্ছ রাজনীতির নতুন সূর্য।

এদের মাধ্যমে অবসান ঘটা অপরাজনীতির পূণরাবৃত্তির কোন সুযোগ নেই। কোন বিবেকবান মানুষ এই ধারার রাজনীতি আর করতেই পারে না। আল্লাহ অসীম দয়ালু, ৫ আগষ্ট আল্লাহর কাছ থেকে আমার জন্য অন্যরকম পুরস্কার। আওয়ামী সরকার টিকে থাকলে আমাকে হয়তো বিভিশীকাময় আয়না ঘরের স্বাধ পেতে হতো। আমাকে অপমান করার বিচার চাওয়ার মুখ্যম সময় এখন।

বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য সংস্কারের পর নির্বাচন দেওয়া এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা বলেও জানান ড. ইউনূস।তিনি বলেন, তাদের (তরুণদের) নেতৃত্বে একটি বড় কাণ্ড হয়ে গেল। কাজেই তাদের অবিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। আমি বরাবরই বলে আসছি, তরুণদেরই দেশ চালানো উচিৎ। তারাই তাদের ভবিষ্যৎ রচনা করবে। শুধু বাংলাদেশ না, সারা বিশ্বেই তরুণদের হাতে দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া ভালো। আমি তার এই মুৎক চিন্তাধারাকে সাধুবাদ জানাই।
নিজ উদ্যোগে তিনটি সামাজিক ও মানবিক সংগঠন প্রতিষ্ঠাতা করেছি। শাহরাহাত আলী ছাত্র যুব ঐক্য সংঘ, রাবেয়া গফুর জনকল্যাণ সংস্থা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্হা। মানবিক কার্যক্রম এখনও প্রচলিত রয়েছে। ভবিষ্যৎ এ রাজনীতি করার বিষয়ে যথেষ্ট চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে পরিচ্ছন্ন প্রক্রিয়ায় দেশগড়ার কাজে নিজকে সম্পৃক্ত করতে পারলে জীবন কে সার্থক মনে করবো।

আমার দায়িত্বকালিন ক্ষুদ্র সময়ে ২০১৯-২০২০ এ পিজি হাসপাতালে ভর্তি কালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সর্বাত্বক চিকিৎসা তদারকি করার সুযোগ হয়েছিলো। আমি অত্যান্ত নিষ্ঠার সাথে তার চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিপূর্ণ কাজটি করেছিলাম। সততা, নিষ্ঠা ও জনস্বার্থে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য আমি সবসময় দৃঢ় প্রতিজ্ঞা বদ্ধ। আমি ভালবাসি সাধারণ মানুষদের সবাইকে ভালবাসার মধ্য দিয়ে বিশ্ব জয় করতে চাই।
 

দৈনিক পুনরুত্থান / নিজস্ব প্রতিবেদক

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন