চাঁদপুরে জাহাজে হত্যাকাণ্ড : ৭ দিনের রিমান্ডে গ্রেপ্তার ইরফান
চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের কাছে সারবোঝাই এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া জাহাজের লস্কর আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে সাত দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর নৌ পুলিশের পরিদর্শক মো. কালাম খাঁ চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ফারহান সাদিকের আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট শরীফ মাহমুদ সায়েম বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন। জামিন শুনানিকালে এপিপি অ্যাডভোকেট শরীফ মাহমুদ সায়েম, মাসুদ প্রধানীয়া, ইয়াসিন আরাফাত ইকরাম, শাহজাহান খান এবং আইনজীবী শামিম হোসেন, মিল্টন ও তোফায়েল উপস্থিত ছিলেন। তবে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
অ্যাডভোকেট শরীফ মাহমুদ সায়েম বলেন, এই সেভেন মার্ডার চাঁদপুর তথা সারা বাংলাদেশে একটি আলোচিত ঘটনা। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় জাহাজের লস্কর আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আমরা শুনানি করেছি। এই হত্যার আরও কেউ জড়িত আছে কিনা এবং আলামত আছে কি না, তা উদ্ধারের জন্য আদালত ব্যাপক শুনানি নিয়েছে এবং তাকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে প্রাথমিকভাবে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর আরও তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছি।
এর আগে মঙ্গলবার বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ বুধবার দুপুরে র্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ব্রিফ করেন র্যাব-১১ এর উপ-অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন। পরে আজ বিকেলে চাঁদপুর নৌ পুলিশের হাতে আকাশ মণ্ডল ইরফানকে হস্তান্তর করা হয়। সন্ধ্যায় নৌ পুলিশের পরিদর্শকও মো. কালাম খা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ফারহান সাদিকের আদালতে হাজির করেন। আদালত তাকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার দুপুরে চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে এমভি আল বাখেরা জাহাজ থেকে পাঁচজনের মরদেহ এবং তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে দুজন মারা যান।
নিহতরা হলেন- নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার এগারনলি এলাকার আবেদ মোল্লার ছেলে সালাউদ্দিন (৪০), একই উপজেলার পাংখারচর উত্তর এলাকার মাহবুবুর রহমান মুন্সীর ছেলে আমিনুর মুন্সী (৪১), ফরিদপুরের কোতোয়ালি উপজেলার জুয়াইর এলাকার মৃত আনিছুর রহমানের ছেলে মো. গোলাম কিবরিয়া (৬৫), একই এলাকার মৃত আতাউর রহমানের ছেলে শেখ সবুজ (২৭), মাগুড়ার মহম্মদপুর উপজেলার চর বসন্তপুর এলাকার আনিছ মিয়ার ছেলে মো. মাজেদুর (১৮), একই উপজেলার পলাশবাড়িয়ার দাউদ হোসেনের ছেলে মো. সজীবুল ইসলাম (২৯) এবং মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার দেলোয়ার হোসেন মুন্সীর ছেলে রানা কাজী (৩২)। তারা সবাই জাহাজের স্টাফ।
এ ঘটনায় গতকাল রাতে হাইমচর থানায় হত্যা ও ডাকাতির অভিযোগে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন জাহাজটির মালিক মাহবুব মোর্শেদ।
দৈনিক পুনরুত্থান /
- বিষয়:
- হত্যা
- মামলা
- গ্রেফতার রিমান্ড
আপনার মতামত লিখুন: