• ঢাকা
  • শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

Advertise your products here

  1. জাতীয়

বাকেরগঞ্জে কিশোর গ্যাংয় অভি ডি.কস্তার ছত্রছায়ায় চলছে মাদকের রমরমা বাণিজ্য!


দৈনিক পুনরুত্থান ; প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:০০ পিএম
বাকেরগঞ্জে কিশোর গ্যাংয় অভি ডি.কস্তার ছত্রছায়ায় চলছে মাদকের রমরমা বাণিজ্য!

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৩ নং পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের খ্রিস্টান পল্লীর সর্বশেষ দক্ষিনে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সংলগ্ন সাবেক ইউপি সদস্য মিঠু ডি.কস্তার স্কুল পড়ুয়া ছাত্র অভি ডি.কস্তার নেতৃত্বে চলছে ইয়াবা,গাজা ও চোলাই মদের রমরমা বাণিজ্য। যার নৈপথ্য ভূমিকায় রয়েছে এই উঠতি বয়সী কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদার বলে খ্যাত অভি ডি.কস্তা।

বাকেরগঞ্জ থানা থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার পাদ্রীশিবপুর খ্রিস্টান পল্লীর সর্বশেষ দক্ষিণেই চলছে এই মাদকের রমরমা বাণিজ্য। নাম প্রকাশ করার না শর্তে একাধিক এলাকাবাসীই জানান,প্রতিদিন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই কিশোর গ্যাংয় এর মূল হোতা অভি ডি.কস্তা এবং তার ভাই কলেজ পড়ুয়া ছাত্র অর্ণব ডি.কস্তার নিকট দূর দূরান্ত থেকে আগতদের উদ্দেশ্যে ইয়াবা,গাজা ও চোলাই মদ পাইকারি এবং খুরচা বিক্রয় করে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথেই সাবেক ইউপি সদস্য মিঠু ডি.কস্তার পাদ্রীশিবপুরের গ্রামের শ্বশুর বাড়ীতে বিভিন্ন বয়সের কিশোরদের নিয়ে চলে ইয়াবা,গাজা ও চোলাই মদের আড্ডা।প্রতিদিন যেমন কিশোর গ্যাংয়ের গডফাদার অভি ডি.কস্তা ইয়াবা পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় করেন অপরদিকে তার বড় ভাই কলেজ পড়ুয়া ছাত্র অর্ণব ডি.কস্তা বিপুল পরিমাণে গাজা ক্রয় করে তা ২০/- টাকা থেকে শুর করে ২০০/- টাকার পর্যন্ত পোল্ডা বানিয়ে প্রতিদিন বিক্রি করে ঠিক তেমনি তার মা অর্থাৎ সাবেক ইউপি সদস্য মিঠুর ডি.কস্তার স্ত্রী রুবি মধুও চোলাই মদ তৈরি করে তা বিক্রি করিয়া অবৈধভাবে লক্ষ,লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে ।

তাছাড়াও কিশোর গ্যাংয়ের মূল হোতা অভি ডি.কস্তা ও তার বড় ভাই অর্ণব ডি.কস্তার নেতৃত্বে রয়েছে অত্র এলাকার ১৫/২০ জনের একটি সঙ্ঘবদ্ধ কিশোর গ্যাং।তাদের দূরদূরান্ত থেকে পরিচিত জনের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টাকা পাঠালে তারা টাকার বিনিময়ে ইয়াবা,গাঁজা ও মদ এই সঙ্ঘবদ্ধ কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে মধ্যেমে তা যথা স্থানে নিমিষের মধ্যে পৌঁছে দেয় বলে সূত্র জানায় ।বিশেষ করে গত ৫ আগস্টে সরকার পতন হলে সারা দেশে যখন আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটে ঠিক সেই সময় এই কিশোর গ্যাংয়টিও জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন প্রকারের চুরি,ডাকাতি,ছিনতাই,ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ সহ লুটতরাজ নামের নানান কিসিমের অপরাধে ।

ইতিমধ্যে রুবি মধু চোলাই মদ তৈরি এবং চাঁদাবাজি ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা থাকার কারণে একাধিকবার জেল কেটেছেন বলে এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়।মিঠু ডি.কস্তা একবার প্রভাবশালীদের সমর্থন নিয়ে ইউপি সদস্য হওয়ার কারণে তার দুই পুত্র এবং তার স্ত্রীরর মাদক বিক্রি যেন ওপেন সিক্রেট।তাদের ভয়ে এলাকার কেহ প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারেনা। এ বিষয়ে বাকেররগঞ্জ থানা পুলিশকে একাধিকবার বিভিন্ন উপায়ে অবহিত করা সত্ত্বেও তাদেরকে দেখা যায় রহস্যময় ভূমিকায়।আর এই কারণে তাদের ওপার সম্পূর্ণ আস্থা না পাওয়ার কারনে এলাকাবাসী দ্রুত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।অতি লাভজনক এই ব্যবসায় কিশোররাই প্রধান হাতিয়ার ও অন্যতম টার্গেট।

ঐতিহ্যবাহী পাদ্রীশিবপুর সেন্ট আলফ্রেস্ স্কুল এন্ড কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এই মাদকের ভয়াবহতা ছরিয়ে ছিটিয়ে দেওয়ার মূল হোতাই পাদ্রীশিবপুরের এই মাদক সম্রাট অভি।আর তার এই মাদক সেবন বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষের নিকট হাতেনাতে ধরা পড়লে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে তাৎক্ষণিকভাবে স্কুল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেন। বর্তমানে এই কিশোর গ্যাংয়ের মূল হোতা মাদক সম্রাট অভি ও তার গ্যাংয় বাহিনীর কারেনে পাদ্রীশিবপুর এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকা গুলোর যুবসমাজ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। যার ফলে এলাকায় প্রতিনিয়ত চুরি,ডাকাতি সহ নানান ধরনের অপরাধের প্রবণতা দিন, দিন বেড়েই চলছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাদ্রীশিবপুর খ্রিস্টান পল্লীর এক বাসিন্দা জানান,আমার ছেলের বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছর।

দীর্ঘ ৪ বছর ধরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। প্রায় মাদকের টাকার জন্য বাড়িতে ঝগড়া ও সংসারের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এলাকায় যদি এই মাদক বেচাকেনা না হতো তাহলে আমার ছেলেটির এমন পরিণতি হতো না।সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতে মাদক, অপরাধ ও যৌনতা একই বৃত্ত। মাদক বহন করতে গিয়ে একজন কিশোর প্রথমে ওই প্যাকেট খোলে। সেখান থেকে সে মাদকাসক্ত হয়।

মাদকাসক্ত হলে ওই কিশোরের টাকার প্রয়োজন হয়। তখন ২০টি গাঁজার পুড়িয়া বিক্রি করলে তাকে দুটি বিনামূল্যে দেওয়ার কথা বলে। এভাবে মাদকের সঙ্গে জড়িত কিশোররা ভবিষ্যতে পেশাদার সন্ত্রাসী হওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে।এই মাদকের আখড়াকে অনতিবিলম্বে যদি ধ্বংস না করা হয়, তাহলে অতি অল্প সময়ের মধ্যে শিশু, কিশোর, যুব সমাজ মাদকে নিমজ্জিত হয়ে যাবে, আশঙ্কা তাদের।এ ব্যাপারে বাকেররগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আফজাল হোসেন জানান, মাদকের ব্যাপারে আমাদের সাথে কোন আপোষ নেই। এ ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স এবং মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে আমাদের জিহাদি অভিযান চলতে থাকবে।পাশাপাশি মাদকের বিভিন্ন স্পটগুলো আমাদের কঠোর নজরদারিতে রেখেছি।তবে এ ব্যাপারে সমাজের সকল পেশা শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গদের সহযোগিতা দরকার।

দৈনিক পুনরুত্থান / নিজস্ব প্রতিবেদক

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন